প্রকাশের সময়: ২:৫৬ পিএম । বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ প্রিন্টের তারিখঃ ৪:৪০ এম । শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

এম.এম.সি. হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবে ডোনেশনে মেশিন নেওয়ার প্রবণতা যেন দিনে দিনে বাড়ছেই

ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি, সময় বাংলাদেশ ।।

ময়মনসিংহঃ ১লা মে বৃহস্পতিবার (সময় বাংলাদেশ) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (এমএমসি) হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবে, প্রাইভেট কোম্পানির কাছ থেকে ডোনেশনে প্যাথলজি ও বিভিন্ন মেশিনপত্র নেয়ার প্রবণতা দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে ।

 

সরকারিভাবে মেশিন বসানোর চেয়ে, কোম্পানির কাছ থেকে ডোনেশনে মেশিন নেওয়ার আগ্রহ বেশি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের। প্রয়োজন না হলেও অতিরিক্ত মেশিন এনে ল্যাবগুলোতে বসাচ্ছেন তারা। এ নিয়ে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট সিসিইউ প্যাথলজি ল্যাবে আগে থেকেই রয়েছে দুইটি হরমোন এনালাইজার মেশিন। এরপর আরও একটি মেশিন বসানোর কাজ চলছে। জিনেসিন কোম্পানির কাছ থেকে সম্পূর্ণ ডোনেশনে এই মেশিন বসানোর কাজ চলমান আছে।

 

কোম্পানি রুমের থাই গ্লাস থেকে শুরু করে সমস্ত ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছেন। এমনকি এসি পর্যন্ত বিনা টাকায় দিচ্ছেন। দুইটি মেশিন থাকার পরও আরও একটি মোশন মেশিন বসানোকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

 

জিনেসিন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার রাহাত জানান, আমি কোম্পানির দায়িত্ব পালন করছি। যতটা জানি এই মেশিন বসানোর ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন অর্থ নেয়া হবে না। শুধুমাত্র তারা আমাদের কাছ থেকে রিএজেন্ট কিনবেন। আমরা এসি দেয়াসহ মেশিন বসানোর ক্ষেত্রে সমস্ত ব্যবস্থাপনার কাজ করে দিচ্ছি।

 

সিসিইউ প্যাথলজি ল্যাবের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে (সময় বাংলাদেশ) কে জানান, এটি ছাড়াও আমাদের আরো দুটি হরমোন এনালাইজার মেশিন রয়েছে। ওই দুই মেশিন দিয়ে কাজ চলে আসছিল। এরপর হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার – ডাক্তার ঝন্টু সরকার স্যারের তত্ত্বাবধানে নতুন করে আরো একটি কোম্পানি থেকে এনে মেশিন বসানোর কাজ চলছে । আমরা শুধু মেশিন পরিচালনা করে থাকি, কিভাবে মেশিন আসবে সেটা আমাদের জানার কথা না।

 

সম্প্রতি তিন থেকে চার মাস আগে হাসপাতালের ইনডোর, আউটডোর এবং ওয়ানস্টপ সার্ভিসে একটি করে সিবিসি পরীক্ষা করানোর জন্য সিক্স ম্যাক্স কোম্পানির কাছ থেকে সম্পূর্ণ ডোনেশনে এনে মেশিন বসানো হয়েছে। যদিও প্রত্যেকটি প্যাথলজি ল্যাবে আগে থেকেই সিবিসি পরীক্ষার মেশিন রয়েছে।

 

প্যাথলজি ল্যাব গুলোতে জায়গা সংকুলান না হলেও একপ্রকার গাদাগাদি করে আরও একটি মেশিন বসানো হয় হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবের প্যাথলজিস্ট ইনচার্জ ডাক্তার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে।

 

এসব মেশিন বসানোর ক্ষেত্রে কোম্পানির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কথাও রয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসক কর্মচারীদের মাঝে।

প্যাথলজি ল্যাবের কর্মচারীরা জানান, আগের বসানো সিবিসি মেশিনগুলো ভালোভাবে চলছে। এখন কেন নতুন করে আবারো মেশিন বসানো হল এটা তারা বুঝতে পারছেন না।

 

হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডাক্তার ঝন্টু সরকার জানান, আগের বসানো দুটি হরমোন এনালাইজার মেশিনে মাঝেমধ্যেই রোগীদের পরীক্ষার ফলাফলে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এ কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে কোম্পানির কাছ থেকে ডোনেশনেই আরো একটি মেশিন বসানোর কাজ চলছে।

 

হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবের প্যাথলজিস্ট ইনচার্জ ডাক্তার খালেদ মোশারফ জানান, আমি কারো কাছ থেকে এক টাকা খাই না, কাউকে দেইনা। হাসপাতালে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ভালো মানের ফলাফলের জন্যই ভালো মানের মেশিন বসানো হয়েছে। এ নিয়ে কোন অনিয়ম হয়নি। যাদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে তারাই হয়তোবা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে বলে জানান তিনি।

 

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডাক্তার মাইনুদ্দিন খান (সময় বাংলাদেশ) কে জানান, প্যাথলজি ল্যাবে মেশিন বসানোর ক্ষেত্রে কোথাও কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা, সে বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখব। অনিয়ম পেলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে একথা স্পষ্ট করেন তিনি।

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ- ফরিদুজ্জামান শান্ত, মোবাইলঃ- ০১৫৩৮-৪১৯৮৮৯ বার্তা কক্ষঃ- somoybangladesh.news@gmail.com . কপিরাইট © সময় বাংলাদেশ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন